১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেটের পরিচালক মান্নান তালুকদার কারাগারে

গত ৩০ মে দুদকের করা ১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় বাগেরহাটের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার বিকালে তিনি বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলক চন্দ্র বিশ্বাসের আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বিচারক দীর্ঘ শুনানি শেষে তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন। এই মামলায় গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান পলাতক রয়েছেন।

গত ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে এমডি আব্দুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের একটি মামলা করেন।

আদেশের পর এজলাস থেকে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার বের হওয়ার পর যাতে সংবাদকর্মীরা তার ছবি ধারণ না করতে পারে সেজন্য তার আইনজীবীর নেতৃত্বে অন্তত ৪০ জন আইনজীবী তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখে আদালত থেকে তাকে নিচতলা পর্যন্ত পৌঁছে দেন। পরে তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে না তুলে তার ব্যক্তিগত গাড়ীতে জেলা কারাগার পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হয়।

দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী বলেন, গত ৩০ মে বাগেরহাট শহরের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের এমডি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদক মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে। ওই মামলায় তিনি সোমবার আত্মসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল মান্নান তালুকদার নামে এক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেড নামে একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চেয়ারম্যান করা হয় বাগেরহাট শহরের মিঠাপুকুরপাড় জামে মসজিদের ঈমাম আনিসুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তিকে। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার প্রলোভনে বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি। গত কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি (অ্যাকাউন্ট) হিসাব থেকে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন। এই টাকা কোথায় পাচার করা হয়েছে তা জানতে দুদক অনুসন্ধান চালাচ্ছে।

বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি একে আজাদ ফিরোজ টিপুর নেতৃত্বে অন্তত ৪০ জন আইনজীবী আসামি আব্দুল মান্নান তালুকদারের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন।

এদিকে আব্দুল মান্নান তালুকদারকে কারাগারে পাঠানোয় গ্রাহক ও সাধারণ মানুষ খুশি হয়েছেন। তারা মান্নান তালুকদারের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

Categories: খুলনা বিভাগ,জাতীয়,ব্রেকিং নিউজ,সারাদেশ

ব্রেকিং নিউজ