এক মাসের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতুতে বসল দ্বিতীয় স্প্যান। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপনের পদ্মা সেতুর ১১তম স্প্যানটি ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এতে জাজিরা প্রান্তে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ১৬৫০ মিটার।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে জাজিরা প্রান্তে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই স্প্যানটি বসানো হয়। স্প্যানটি ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই দিয়ে সফলভাবে বসানো হয়। এটি বসানোর ফলে পদ্মাসেতুর ১৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো। নতুন স্প্যানটি বসানোর ফলে জাজিরা প্রান্তে মোট স্প্যানের সংখ্যা দাঁড়ালো নয়টিতে।এখন পর্যন্ত মাওয়া প্রান্ত একটি স্থায়ী ও একটি অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১১টি।
সেতু বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানান, মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর ১১তম স্পেনটি বসানো হয়েছে। এতে জাজিরা প্রান্তে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ১৬৫০ মিটার। এ মাসে দুটি স্প্যান বসানো হলো। আগামী মাসে দুটি স্পেন বসানো হবে। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সবকটি স্পেন বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলাবো বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কলকারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন পদ্মা পাড়ের মানুষ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় সাত কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
দোতলা এ সেতুর নিচতলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্পেনগুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানোর কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্পেনগুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর দুই হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়াডে স্পেন ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, আগে ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর ১ম স্পেন এবং ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্পেন, ১০ মার্চ তৃতীয় স্পেন, ১৩ এপ্রিল ৪র্থ স্পেন এবং ২৯ জুন ৫ম স্পেন বসানো হয়।
২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ স্প্যান, ২০ ফেব্রুয়ারি ৭ম স্পেন বসানোর হয়েছে। ২০ মার্চ ৮ম স্পেন, ১৮ এপ্রিল ৯ম স্পেন বসানো হয়। এ ছাড়া মাওয়া পয়েন্টের দিকে গত বছর আরও একটি স্পেন ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ওই স্পেনটি তৈরি করা হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর জন্য।
নকশা জটিলতা ও পিলার তৈরি না হওয়ায় এবং ওয়ার্কশপে জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে তুলে রাখা হয় স্পেনটি। নকশা জটিলতা কেটে যাওয়ার পর ৬ ও ৭ নম্বর পিলার তৈরি হলে স্পেনটি সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ।