দেশের কোথাও জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের সামান্য আলামত পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর বিরুদ্ধে দেশের সব মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের কোথাও এতটুকু জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের আলামত দেখলেও সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিন। আমরা এ ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাতে সংসদ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
অধিবেশনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ, শ্রীলঙ্কার গির্জা ও হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা, ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ এবং এসব সন্ত্রাসী ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব সংসদ, সরকার ও নাগরিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আনীত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রস্তাবটি সমর্থন করে প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ দেশ নিউজিল্যান্ডেও নামাজ পড়া অবস্থায় ৫৩ জন মুসল্লিকে হত্যা করে একজন খুনি ক্যামেরা মাথায় নিয়ে। সে একজন উগ্রবাদী খ্রিষ্টান ছিল। ওই হামলা থেকে আমাদের জাতীয় ক্রিকেট টিমের সদস্যরা অল্পের জন্য বেঁচে যান।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সমস্যা। শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিষ্পাপ শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হয়। প্রায় ৪২ জন বিদেশি মারা যান ওই ভয়াবহ হামলায়। আত্মঘাতী সন্ত্রাসীরা এই হামলা করেছে। এ ধরনের জঘন্য ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে আহ্বান জানাব। হলি আর্টিজানে হামলার পর আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা সঠিক সময়ে সংবাদ দিতে পারছে বলেই অনেক জীবন রক্ষা পাচ্ছে।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীকে জানাবেন, যেন আমরা পদক্ষেপ নিতে পারি। আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। জঙ্গিবাদ দমনে যা যা করার দরকার, তা করা হবে।
সংসদ নেতা বলেন, যারা এ ধরনের হামলা করে, তাদের কোনো ধর্ম নেই। আল্লাহ ও রাসূল মানলে তারা হত্যা করত না। ইসলাম ধর্ম পবিত্র ও শান্তির ধর্ম। কে মুসলমান, কে মুসলমান না, তা বিচার করার দায়িত্ব কারও নেই। কোরআনে এটা বলা নেই- কে মুসলমান, কে মুসলমান নয়, তা বিচার মানুষ করবে। এই বিচার করবেন আল্লাহ। যে এ ধরনের বিচার করতে যায়, সে তো আল্লাহকেই মানে না। তাই শান্তির ধর্মকে কলুষিত করা- এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।