ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কালের পরিক্রমায় দলটি ৭১ বছরে পদার্পণ করেছে। দীর্ঘ এই পরিক্রমায়, বহু প্রতিকূলতার মাঝেও টিকে আছে স্বমহিমায়, এবং উত্তর উত্তর সমৃদ্ধ হচ্ছে ক্ষমতাসী দলটি। দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দানকারী ক্ষমতাসীন দলটি নতুন ও তারুণ্যের শক্তিতে দলকে সাজাতে কাজ করছে। এবার অধিক সংখ্যক তরুণ নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আগামী অক্টোবরে দলটির ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যা কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সারাদেশের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ইউনিট কমিটি গঠন করে সম্মেলনের তাগিদ দিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দু।
আ’লীগ সূত্রে জানা যায়, এবার সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হতে পারে তারুণ্যই শক্তি। তারুণ্যের শক্তিতে এগিয়ে যাবে দেশ ও আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে নতুন নেতৃত্ব আনার কথাই শোনা যাচ্ছে দলটির ভেতর-বাহিরে। এবং পরিচ্ছন্ন, ব্যক্তিগত সদাচারণ ও কর্মীবান্ধবই হবে তরুণদের পদ পাওয়ার যোগ্যতা বলে জানান দলের একাধিক নীতি নির্ধারণী নেতা। আসছে কাউন্সিলে দলকে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সাজানো হবে।
এদিকে তরুণদের রাজনীতিমুখী করতে আওয়ামী লীগ নানামুখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের নিয়ে দলীয় চিন্তাভাবনা, বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার মধ্যদিয়ে তরুণ সমাজকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ইতিবাচক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, ২০তম জাতীয় সম্মেলনেও বেশ কয়েকজন তরুণকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এবার তা অধিক হারে হবে বলে জানা যায়। তাদের সাংগঠনিক দক্ষতায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সন্তুষ্ট। এসব কারণে আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে ২১তম জাতীয় সম্মেলনে তরুণদের স্থান দিতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতীয় সম্মেলনের আগেই তৃণমূল পর্যায়েও তরুণ নেতৃত্বকে দলের স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্বে আনার তাগিদ দিয়েছেন।
তৃণমূলে এখনও অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব আসেনি, যা দলের জন্য প্রয়োজন উল্লেখ করে ময়মনসিংহ সদর আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুস সালাম সরকার বলেন, বহু বছর ধরে আমরা দায়িত্ব পালন করছি, আমার ব্যক্তিগত মত হল, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে যদি দল গঠিত হয়, তবে দলের কার্যক্ষমতা বেড়ে যাবে বহুগুণ। এতে করে দলের মাঝে অসন্তোষ কমে যাবে এবং দল আরও সুন্দর ভাবে চলবে। এময় তিনি আরও বলেন, তরুণ নেতৃত্বের দোহাই দিয়ে বহিরাগত ও সন্ত্রাসী যেন দলে না আসতে পারে সে দিকে জোর দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের।
দেশের বিভিন্ন জেলার নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ নেতৃত্বকে ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে অধিক সংখ্যক কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিবে এটা একপ্রকার নিশ্চিত। এতে করে দল আরও বেশি সুসংগঠিত হবে এবং দলের মাঝে কাজের স্পৃহা অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলেও তারা জানান। তবে তাদের দাবি অবশ্যই মেধাবী ও বিনয়ী তরুণরাই যেন স্থান পায় আসছে কমিটিতে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু তরুণ সময়েই দলটির নেতৃত্বে এসেছিলেন। এই দলটি দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছে। এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ বেশি সংখ্যক তরুণরাই অংশগ্রহণ করেছে। তরুণরা সৃষ্টি করতে পারে। আর অভিজ্ঞরা নির্দেশনা দেয়। অভিজ্ঞতা ছাড়া কখনও কিছু হয় না। ইতিহাস তাই বলে। অতএব, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়েই গঠন হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। যা এতদিন হয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেও জানান তিনি।