৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহম্মেদের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। বীরত্বের সঙ্গে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখার জন্য তাকে সুন্দরবনের ‘মুকুটহীন স¤্রাট’ বলা হয়ে থাকে। জিয়াউদ্দিনের জন্ম পিরোজপুর জেলায়। তার পিতার নাম আফতাব উদ্দিন আহমেদ; তিনি পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। জিয়াউদ্দিন আহমেদ ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর মেজর হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জুলাই মাসে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে তাতে যোগ দেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় ১৯৭৪ সালে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় নিবন্ধ লেখার জন্য শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে চাকরীচুত করা হয়। তখন তাঁর পদবি ছিলো লেফটেন্যান্ট কর্নেল। চাকরীচ্যুত হওয়ার পর তিনি পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৯-৯১ সালে বিপুল ভোটে পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধে নিজের ও অন্যান্যদের অংশগ্রহণ এবং যুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে তিনি “সুন্দরবন সমরে ও সুষমায়” নামে একটি বই লিখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষি এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ অনেকদিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১ জুলাই ২০১৭ইং তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে কেবিনে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ট্রোক করেন তিনি। পরে ১১ জুলাই ২০১৭ইং সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় তাকে। এর আগে, সাব সেক্টর কমান্ডার জিয়ার লিভার সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই দ্রæত লিভার প্রতিস্থাপন করার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। শুক্রবার ২৮ জুলাই ২০১৭ইং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
https://youtu.be/AaIWdMWtRos