গত ২০ জুলাই সন্তানের স্কুলের খোঁজখবর নিতে গিয়ে ছেলে ধরা সন্দেহে একদল উৎসুক জনতার হাতে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেনু। গণপিটুনিতে হত্যার শিকার রেনুর পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ইশরাত হাসান। রিটে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেনুর পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে দশ লাখ টাকা দেয়ার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ছেলেধরা গুজব তৈরি করে গণপিটুনিতে জড়িতদের বিচারে পৃথক আইন তৈরির নির্দেশনার পাশাপাশি গণপিটুনির হাত থেকে রেনুকে বাঁচাতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। একই সঙ্গে রিটে গুজব-সংক্রান্ত সব পোস্ট ফেসবুক থেকে মুছে ফেলার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে কথাবার্তায় সন্দেহ হলে মুহূর্তের মধ্যে লোক জড়ো হয়ে তাসলিমা বেগম রেনুকে গনপিটুনি দিলে তিনি গুরুতর জখম হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চারশ থেকে পাঁচশ মানুষকে আসামী করে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাগনে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।
স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, ছেলেধরা বলে সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় অন্যতম হোতা হৃদয়কে গ্রেফতারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড দেয় পুলিশ। এছাড়াও গুজব রটনাকারী রিয়া বেগম ওরফে ময়না (২৭) কে আটক করা হয়েছে।এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও তিনজনকেও আটক করা হয়েছে।
সেদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরার গুজবের কারণে আরও চার জন সাধারন মানুষ গণপিটুনিতে নিহত হন।
নিহত তাসলিমা রেনু লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বাসিন্দা ছিলেন। দুই বছর আগে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর চার বছর বয়সী মেয়ে তুবাকে নিয়ে তিনি মায়ের সাথে থাকতেন । তাহসিন নামে ১১ বছর বয়সী বড় ছেলে থাকে তার পিতার কাছে।