সেই স্কুল মাঠ, সেই ঘন্টা, সেই এসেম্বলি, আর সময়ের ব্যবধানে বিস্মৃতি হয়ে যাওয়া সেই চেনামুখ। মাঝে কেটে গেছে ১৯ টি বছর। শুক্রুবার (২৪ জানুয়ারি) শিকড়ের টানে বন্ধুত্ব নয় ভ্রাতৃত্ব এ চেতনাকে বুকে ধারণ করে পিরোজপুর জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী কিন্ডারগার্টেন ফাতেমা শিশু নিকেতন।
স্কুলের ২০০১ থেকে ২০১০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। পুনর্মিলনী উপলক্ষে সারাদিন-ব্যাপী ছিল নানা আয়োজন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রতিটা আয়োজনেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণে। এ যেন শিক্ষাজীবনের স্মৃতিময় শিকড়ে আবার যেন টাইম মেশিনে করে ফিরিয়ে আনার একটুকরো প্রয়াস।
সকাল ১০ টায় স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে আনন্দ র্যালি শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে সাড়ে নয়টায় অনুষ্ঠিত এসেম্বলি মধ্যে শুরু হয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের এটাই ছিল সব থেকে স্মরণীয় মুহূর্ত। এ যেন ফ্লাশ ব্যাকে যাওয়া। স্কুল জীবনের সব থেকে স্মরণীয় মুহূর্তে আবার ফিরে যাওয়া। ঘন্টা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সবাইকে এসেম্বলিতে আহ্বান করা হয়। ঘন্টার শব্দ শুনে পুরোনো দিনের মতো ছাত্ররা সবাই ছুটে যান নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানে প্রার্থনা, শপথ, জাতীয় সংগীত ও পিটি করার মধ্য দিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
এসেম্বলি পরিচালনা করেন স্কুলের বর্তমান সহকারী শিক্ষক সৈয়দ ইসরাক হাসান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক মৃন্ময় সমাদার, মিজানুর রহমান রিয়াদ এবং সহকারি শিক্ষক মমতাজ, তহমিনা,মনিকা সাইদা, স্বর্নালী,মিথিলা,লিজা । এসেম্বলির সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাই আবেগ ও আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় তারা নানান স্মৃতিচারণ করেন।
২০০১ ব্যাচের শিক্ষার্থী অর্নব বলেন, “আজ অনেক বছর পর এসেম্বলি করতে এসেও মনে হল অনুভুতি সেই আগের মতোই রয়েছে। নিজেদেরকে এখন সেই পিটি করতে আসা ছোট ছেলের মত লাগছে যা আমরা পার করে এসেছি অনেক আগেই।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার বলেন, “অনেক বছর পরে ছোট সোনামণি দের দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পরি।প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিকড়ের টানে ফিরে এসেছে দেখে আমার গর্ববোধ হয়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর পুলিশ সুপার জনাব হায়াতুল ইসলাম খান। এরপর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের মঙ্গল কামনা করে তাদেরকে দিক নির্দেশনামূলক উপদেশ দেন। এসময় না ফেরার দেশে চলে যাওয়া স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্যান্ডরাও অংশগ্রহণ করে।