নাজিরপুরে ব্রীজের পুরাতন মালামাল আত্মসাতে চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় একটি সরকারী আয়রন ব্রীজের পুরাতন কিছু লোহার মালামাল আত্মসাতের  স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ দলীয় ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৯ হাজার টাকার লোহার পুরাতন মালামাল আত্মসাৎ করার অভিযোগে থানায় মামলাও হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে সম্পূর্ন সাজানো বলে দাবী অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু ও পরিষদের অধিকাংশ সদস্যদের। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরাও। তাদের সকলের অভিযোগ আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী একটি পক্ষ ঘটনাটি সাজিয়ে চেয়ারম্যানকে ফাঁসিয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে নাজিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল গাফ্ফার বাদী হয়ে মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলুর বিরুদ্ধে নাজিরপুর থানায় সরকারি আয়রন ব্রীজের লোহার মালামাল আত্মসাৎ করে বিক্রি করার অভিযোগে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য বানিয়ারী গ্রামে অজয় মন্ডলের ঘাটে দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণাালয়ের অধীনে ৩৬ ফুট একটি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে ওই স্থানে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক একটি আয়রন ব্রীজ নির্মান করা হয়েছিল। নতুন গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করায় পূর্বের আয়রন ব্রীজের লোহার ৪১ খানা ভীম উপজেলা পরিষদের কোন অনুমতি ছাড়াই মাটিভাংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের মৃত সিরাজ শেখের ছেলে ইস্রাফিল শেখের কাছে বিক্রি করেন। ক্রেতা ইস্রাফিল শুক্রবার একটি টমটমে করে ওই মালামাল নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার পথে স্থানীরা টমটমসহ ওই মালামাল আটক করে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।
এ ঘটনাকে সম্পূর্ন সাজানো দাবী করেন চেয়ারম্যান , পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তারা চেয়ারম্যানকে সামান্য ১৯ হাজার (প্রায়) টাকার পুরাতন মালামাল আত্মসাতের ঘটনায় ফাঁসানোর জন্য আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এক পক্ষকে অভিযুক্ত করেন। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বলায়েত হোসেন বুলু জানান, তাকে প্রভাবশালী দলীয় প্রতিপক্ষরা এ ঘটনায় ফাঁসিয়েছেন। যে মামলা করেছে বা পুলিশ প্রশাসন ও তার কাছে স্বীকার করেছে ঘটনাটি সাজানো। প্রভাবশালী পক্ষের চাপে মামলা দেওয়া ও থানায় মামলা গ্রহন করা হয়েছে। এটি যে সাজানো তা এলাকার সবাই জানে। যে ব্রীজের মালামাল আত্মসাৎ করার ঘটনা সে ব্রীজটির ঠিকাদার গত কয়েক নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া যে মালামাল বিক্রির কথা মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে,সে সব মালামাল তিনি কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বিধি মোতাবেক তালিকাভুক্ত করে তার পরিষদের জমা রেখেছেন। তার বৈধ কাগজও আছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় তিনি মানহানী মামলা করবেন।
নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি পরিচয়ে তৌহিদুল ইসলাম জানান, ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। আওয়ামীলীগের তিনটি পক্ষ রয়েছে। বেলায়েত হোসেন বুলুকে বেকায়দায় ফেলতে অপরপক্ষ হাস্যকর ভাবে ঘটনাটি সাজিয়েছে। তবে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু ও তার পরিবার এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ নানা সামাজিক কর্মকান্ডে বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। তাকে সামান্য ১৯ হাজার টাকা মালামাল আত্মসাতের অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হাস্যকর ও নিন্দনীয়।


মাটিভাংগা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, এটি সম্পূর্ন সাজানো ঘটনা। যে লোক ব্রীজের কাজ করায় তিনি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষ। এছাড়া মালামাল তো পরিষদে আছে,তা বিক্রি করা হলো কিভাবে। চেয়ারম্যানের নামে মামলা করায় পরিষদের সবাই ক্ষুদ্ধ। অপর আরেক সদস্য বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ লোক ক্ষিপ্ত হয়েছে। করোনা সমস্যা না থাকলে এ ঘটনার প্রতিবাদে ইউনিয়নের দশ হাজার লোক রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করতো।


Categories: বরিশাল বিভাগ,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজ