৩৭ বছরেও জাজ্বল্যমান ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’


‘তোরে পুতুলের মত করে সাজিয়ে, হৃদয়ের কোঠরে রাখবো/ আর হৃদয়ের চোখ মেলে তাঁকিয়ে, সারাটি জীবন ভরে দেখবো’ এমন মিষ্টি কথার রোমান্টিক এই গানটি আশির দশকের জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে একটি। সদ্য প্রেমিক হয়ে উঠা প্রেমিকের মুখে গানটি শোনা যেত অহরহ। আশির দশক পেরিয়ে গেলেও বিংশ শতাব্দির এই যুগে এসেও প্রেমিকের ঠোঁটে এখনও জনপ্রিয় এই গান। গানটি গেয়েছিলেন লক্ষ্য কোটি তরুণ-তরুণীর প্রিয় কন্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। যিনি আধুনিক, ক্লাসিক্যাল ও লোকগীতিসহ সব ধরনের গানের এক উজ্জ্বল তারকা।

সেই ১৯৮২ সালে ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ গান দিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল এই সঙ্গীতজ্ঞের। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। সেই সময়ে এই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আজও লোকমুখে গানটি সমাদৃত। গানটি লিখেছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সুর করেছিলেন নকীব খান।

এই গানটি নিয়ে স্মৃতিচারণ করে কুমার বিশ্বজিৎ  বলেন, আজ থেকে প্রায় ৩৭ বছর আগের কথা। ১৯৮২ সালের দিকে বিটিভিতে আল মনসুর-এর ‘শিউলীমালা’ নামে একটা অনুষ্ঠান প্রচারিত হত। বিটিভির বেশ কিছু নিয়ম আছে গানের ক্ষেত্রে। টেলিভিশনের নিয়ম অনুযায়ী আমার গানটাও রেকর্ডিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় অন্য সবার গান করতে করতে আমার গানের জন্য সময় ছিল না। তখন আমাকে বলা হল, তোমার গান যদি করতে হয় তুমি নিজের মতো করে নিয়ে আসো। আমরা আর সময় পাব না।


তারপর রাজধানীর তেজকুনি পাড়া ঝংকার স্টুডিওতে গিয়ে গানটি রেকর্ডিং করি। এরপর গানটি বিটিভিতে দেই, তারা তাদের অনুষ্ঠানে এটা প্রচার করে। গানটি বিটিভিতে প্রচার হওয়ার পর রীতিমত ইতিহাস হয়ে গেল। এরপর থেকে মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করে। আমাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর এই গানটি আমার অ্যালবামেও রিলিজ হয়। ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ গানটা টার্নিং পয়েন্ট হলেও ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’ গানটা আমাকে অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। গানটা লিখেছেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী আর সুর করেছেন লাকী আখন্দ। এই গানটা আমাকে সঙ্গীতে দীর্ঘস্থায়ী করেছে। একটা ভালো জায়গা করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একজন মানুষ শৈশব থেকে একজন মানুষকে ভালোবাসার নিটল গল্পটা কাব্যিকভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে এই গানে। একটা গান যখন দুই বা তিনটা জেনারেশনকে ছুঁতে পারে, তখন সেই গানের শিল্পী হিসেবে নিজের মধ্যে ভীষণ ভালো লাগা কাজ করে। এটা একজন শিল্পীর জন্য পরম পাওয়া। কোন গানের সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা হল তার স্থায়িত্ব। অনেক গান হয়তো অগোচরে হারিয়ে যায়। তবে স্থায়িত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা একটা ভাগ্যেরও ব্যাপার। ৩৭ বছরেরও আমার এই গানটা যে এখনও মানুষ মনে রেখেছে বা গাইছে এটাই তো অনেক। একজন শিল্পীর কাছে এর চেয়ে বড় আর কিব হতে পারে?


Categories: বিনোদন

ব্রেকিং নিউজ