প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল চার ধাপে প্রকাশ জুলাইয়ে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ এর লিখিত পরীক্ষার ফল আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে চার ফেইজে প্রকাশ করা হবে। চার দফা পিছিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) ১ম ও ২য় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। এখন বাকি আছে তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের পরীক্ষা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপের পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষার রেজাল্টের ১৫ দিন পর দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট। এভাবে পরবর্তীতে বাকি দুই ধাপের রেজাল্ট দেয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের বিশাল এই জনগোষ্ঠীর পরীক্ষা, রেজাল্ট ও পরবর্তীতে ভাইবার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিয়োগ সম্পন্ন করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বদরুল হাসান বাবুল আমার সংবাদকে বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাটি আমরা চার ধাপে নিচ্ছি। আমাদের দুই ধাপের পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আর দুই ধাপের পরীক্ষা বাকি আছে।

বদরুল হাসান বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই বাকি ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী জুলাইয়ের ফার্স্ট উইক থেকে আমরা লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার চেষ্টা করছি। এ রেজাল্ট ধাপে ধাপে দেয়া হবে বলে জানান সরকারের এই কর্মকর্তা।

এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় নতুন করে চার পদক্ষেপ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে একই জেলার প্রশ্ন প্রণয়ন ও প্রিন্টিং কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার কাউকে দায়িত্ব দেয়া হবে না; অন্য জেলার কর্মরতদের এসব কাজে যুক্ত করা হবে; আগের মতো আর অভিন্ন প্রশ্ন সেট দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে না; দু-তিনটি জেলায় একটি অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে।

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তত্ত্বাবধানে। নির্ধারিত জেলায় পরীক্ষার আগের রাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে প্রশ্নপত্রের সব সেট পাঠানো হয়। পরীক্ষার দিন সকালে লটারিতে প্রশ্নপত্র নির্বাচন করে তা ছাপিয়ে তা কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়। সব পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো পৌর এলাকার মধ্যে থাকছে।

আবেদনকারীর আসন বুয়েট অত্যাধুনিক সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেয়। পাশাপাশি বসেও একজনের প্রশ্নের সাথে অন্য জনের প্রশ্নে মিল হবে না। একই সঙ্গে আবেদনকারীর আসন বণ্টন অনুযায়ী প্রশ্নের সেট নির্ধারণ করে দেয়া হয়। প্রশ্নফাঁস ও নকল ঠেকাতে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব পরীক্ষা সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৪ মে অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষা ১১ জেলায় অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন সাতক্ষীরায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ২৯ জনকে আটক করা হয়। পরে ৮ অভিভাবককে ছেড়ে দেয়া হয়। প্রশ্নফাঁসে জড়িত স্থানীয় পাঁচ অপরাধীসহ ২১ জনকে তাৎক্ষণিক বিচারে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া ইলেক্ট্রিক ডিভাইসসহ পাবনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে সেখানে আটজন আটক এবং চারজনকে বহিষ্কার করা হয়। নোয়াখালীতে একজনকে আটক এবং নকল সরবরাহের অভিযোগে পটুয়াখালীতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ৩১ মে পটুয়াখালীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং সহযোগিতার অপরাধে মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড এবং ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

Categories: শিক্ষাঙ্গন

ব্রেকিং নিউজ