প্রিয়া সাহার বক্তব্য ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য : পিরোজপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভিতরে ক্ষোভ

পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগের পিছনে প্রিয়া সাহা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বার্থ অর্জনের চেষ্টায় রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে তার নিজ বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুরের বিভিন্ন মহলের সাথে কথা বলে।

‘শারি’ নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি  বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক হলেন প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কন্ঠ’ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।

প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস (৫৪) পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারী গ্রামের মৃত নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের মেয়ে। তার শ্বশুর বাড়ি যশোর জেলায়। প্রিয়ার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুদকের সদর দফতরে সহকারি উপ-পরিচালক পদে কমর্রত রয়েছেন। তাদের বর্তমান ঠিকানা বাসা-৪৩,এএনজেড এ্যাম্বোসিয়া, ফ্লাট-বি/২, রোড-৪/এ, ধানমন্ডি,ঢাকা। তার দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষ্মী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করেন।

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, চলতি বছরের শুরুতে চরবানিয়ারীতে প্রিয়া সাহার ভাই জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।  প্রিয়া সাহা তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারি গ্রামে তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেড় ধরে স্থানীয় অনেক কয়েক জন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক জনকে হয়রানি করে আসছে। যে ঘটনাকে মিথ্যা ভাবে সাজিয়ে তিনি  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে উপস্থাপন করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে এ ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন নিরিহী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে তিনি আসামী করে হয়রানি করছে।

স্থানীয়রা আরো জানান, প্রিয়া সাহার দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করার করনে তাদের গ্রিনকার্ড পাইয়ে দেয়া ও নিজেকে ঐ দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশাই প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।স্থানীয় মুসলাম-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকে নষ্ট করার জন্যই উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তিনি এ সব মিথ্যা কথা বলেছেন।

নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার জানান, নাজিরপুরে কোন সংখ্যালঘু নির্যাতন বা গুমের ঘটনা নেই। প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ও উষ্কানিমূলক।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, প্রিয়া বালার অভিযোগের বিষয়ে কোন ঘটনা পিরোজপুর জেলার কোথাও ঘটেনি। পিরোজপুরের পুলিশ প্রশাসন সাম্প্রদায়িক যে কোন বিষয়ে সব সময়ই গুরুত্বের সাথে নিয়ে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহন করেন। নাজিরপুর উপজেলায় বা পিরোজপুরের কোথায় কোন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরর লোক গুম নেই। দেশের বাহিরে গিয়ে যে কোন নাগরিককের উচিত দেশের বিষয়ে ভেবে-চিন্তে কথা বলা।

বর্তমানে পিরোজপুরে অবস্থানরত  গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রদায়িক সম্প্রতির দেশ। এখানে কেউ ধর্মীয় বিবেচনায় নির্যাতনের শিকার হন না। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মুসলাম-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান অনন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নাজিরপুরের একটি হিন্দু বা অন্য কোন ধর্ম সম্প্রদায়েরর লোক গুম বা নিখোঁজ হয়নি। প্রিয়া বালার বক্তব্য অসৎ উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক নষ্টের উষ্কানিমূলক অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

Categories: জাতীয়,টপ নিউজ,ব্রেকিং নিউজ,সারাদেশ

ব্রেকিং নিউজ