ডায়াবেটিসের সাথে বসবাসের জন্য খাদ্যের প্রতি যত্নশীল মনোযোগ প্রয়োজন, বিশেষ করে ফলের ব্যবহার সম্পর্কে তাদের প্রাকৃতিক চিনির উপাদানের কারণে। আম এবং কাঁঠাল উচ্চ চিনির উপাদানযুক্ত গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার উপযুক্ততা সম্পর্কে প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে।
আম: আম ভিটামিন সি এবং এ সমৃদ্ধ একটি ফল। একটি মাঝারি আকারের আমে প্রায় ৪৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক শর্করা এবং প্রায় ০৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে। আম এর পরিপক্কতার উপর নির্ভর করে প্রায় ৫১-৬০ এর মাঝারি জিআই রয়েছে। শুধু কাঁচা আমেই নয়, পাকা আমেও পর্যাপ্ত (১০০ গ্রামে প্রায় ৩৪.৭ মিলিগ্রাম) ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন এ ও সি দুটিই শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমের ফাইটোকেমিক্যাল হলো প্রাকৃতিক ফ্যাট বুস্টার। আমে খাদ্য আঁশ থাকায় এটি দীর্ঘ সময় পেটে থাকে, যা আমাদের পেট ভরার অনুভূতি দেয়।
কাঁঠাল: গাছ থেকে জন্মানো সবচেয়ে বড় ফল কাঠাল, একইভাবে এটি খুবই পুষ্টিকর। এক কাপ কাটা কাঁঠালে প্রায় ৩৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং প্রায় ৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এছাড়াও কাঁঠাল ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি ভালো উৎস। কাঁঠালের একটি উচ্চ জিআই আছে যা সাধারণত ৭৫ এর কাছাকাছি থাকে। এই উচ্চতর জিআই ইঙ্গিত দেয় যে কাঁঠাল রক্তে শর্করার মাত্রা আরও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরিচালনা করা আরও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। দি একাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াবেটিসের রিকমেন্ডশন অনুযায়ী, একজন মহিলার প্রতিদিন ২৫ গ্রাম ফাইবার এবং একজন পুরুষের ৩৮ গ্রাম ফাইবার প্রয়োজন হয়। যাদের ওজন স্বাভাবিক এবং ডায়াবেটিস নেই, তারা অনায়াসে শরীরের দৈনন্দিন খাদ্য আঁশের চাহিদা কাঁঠালের মাধ্যমে পূরণ করতে পারে। এতে আঁশ বেশি থাকায় তা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তবে যাদের হজমের সমস্যা আছে, তাদের জন্য কাঁঠাল কম পরিমাণে গ্রহণ করাই উত্তম।
সুবিধা: –
পুষ্টির ঘনত্ব: আম এবং কাঁঠাল উভয়ই ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যে অবদান রাখে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: এই ফলের ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
উচ্চ চিনির উপাদান: উভয় ফলই প্রাকৃতিক শর্করার পরিমাণ বেশি। যা বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে রক্তে শর্করার বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ক্যালরি গ্রহণ: অতিরিক্ত সেবনের ফলে ক্যালরির পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে। যা সম্ভাব্য ওজন ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সতর্কতা
কিডনি রোগীরা উচ্চ পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার (কাঁঠাল, পাকা আম) গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।