শীতে প্রতিদিন মধু খাবেন যে কারণে


শীত এলে প্রতিদিন মধু কেন খেতে বলা হয়? কারণ মধু নানাভাবে আমাদের শরীর ভালো রাখতে কাজ করে। এটি সর্দি-কাশি কেবল সারিয়েই তোলে না, সর্দি-কাশি দূরে রাখতেও সাহায্য করে। শত শত বছর আগে থেকেই এই প্রাকৃতিক ওষুধের গুণ মানুষ জানে। প্রাচীন গ্রিক ও মিসরীয়রা ওষুধ হিসেবে মধু খেত। ভারতের আয়ুর্বেদ ও চীনের প্রাচীন চিকিত্সাশাস্ত্রে মধুর ব্যবহার দেখা যায়। মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি, অ্যামিনো অ্যাসিড ও খনিজ পদার্থ। এটা ঘন বলে গলা ফোলা ও ব্যথায় আরামদায়ক একটি প্রলেপের মতো কাজ করে। মধু ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, পেটের আলসার ভালো করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। তাই শীতে মধু খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলনামূলক বেশি। জেনে নিন শীত এলে কেন প্রতিদিন মধু খাওয়া জরুরি-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে


বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়েও শীতের সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে বেশি নজর দিতে হবে। কারণ এসময় নানা অসুখ-বিসুখের ভয় বেড়ে যায়। নিয়মিত মধু খেলে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। মধুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। এটি আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম ঠিক রাখে। বাঁচায় বিভিন্ন অসুখ থেকে। এটি স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতেও কাজ করে। এর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়। ফলে ভয় কমে আলঝাইমারসের মতো রোগেরও। তাই শীতের সময়ে তো অবশ্যই, বছরের অন্যান্য সময়েও মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন।

রক্তচাপ ঠিক রাখে

সুস্থ থাকার জন্য রক্তচাপ ঠিক রাখা জরুরি। উচ্চ কিংবা নিম্ন রক্তচাপ কোনোটাই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। শীতের সময়ে অনেকের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রতিদিন মধু খেতে পারেন। মধুতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। পাশাপাশি কমায় হৃদরোগের ভয়ও।

কাশি ভালো করে

শীত এলেই ঠান্ডা লাগার কারণে গলা খুসখুস বা কাশির সমস্যা দেখা দেয় অনেকের ক্ষেত্রে। এরকম হলে আপনি কী করবেন? অবশ্যই প্রতিদিন মধু খাবেন। হালকা গরম পানিতে সামান্য লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নেবেন। গরম টক পানীয় আপনার গলার কাছে জমে থাকা কফ বের করে দিতে সাহায্য করবে। মধু খেলে গলার ভেতরে খুসখুসে ভাব কমে যায়। নিয়মিত খেলে কাশিও কমে যাবে। শীতের সময়ে তাই মধু একটু বেশিই দরকারি।

ক্ষত সাড়াতে

শরীরের কোথাও সামান্য কাটাছেঁড়া থাকলে মধুর প্রলেপ দেওয়া যায়। মধুতে উঁচু মাত্রার জীবাণুনাশক উপাদান থাকায় সহজে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হয়। মৌমাছি ফুল থেকে যে মধু সংগ্রহ করে তাতে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পানি থাকে। ওরা নিজেরা কিছু রস খেয়ে বাকিটা মৌচাকে জমা করে। সূর্যতাপে পরিশোধিত হয়ে মধু বিভিন্ন গুণ অর্জন করে। এর জলীয় অংশও অনেক কমে যায়। ফলে কাটাছেঁড়া স্থানে মধুর প্রলেপ দিলে প্রথমে সেখান থেকে জলীয় অংশ শুষে নেয় ও বাইরের জলীয় পদার্থ ঢুকতে দেয় না। জলীয় অংশ না থাকলে ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু বাঁচতে পারে না। এভাবে মধু ক্ষত সাড়াতে সাহায্য করে।

 


Categories: লাইফ স্টাইল

ব্রেকিং নিউজ