ঘুষ ছাড়া কাজ করেননা পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারি ওয়াজুফা খানম। শিক্ষকদের বদলি, পেনশন,জিপিএফ লোন,টিএ বিল, বিদ্যুৎবিল, স্কুল কন্টিজেন্সি সহ যাবতীয় কাজেই ঘুষ লাগে তার। অত্র শিক্ষা অফিসে যোগদান করার পর থেকেই ওয়াজুফা খানম শিক্ষকদের ওইসব ফাইল নাড়তে মোটা অংকের ঘুষ নিচ্ছেন তিনি। শিক্ষা কর্মকর্তার অযোগ্যতার সুযোগ নিয়ে ওয়াজুফা অনায়েসে এ দুর্নীতি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ একাধিকজনের। ওয়াজুফার হাতে ফাইল আটকার ভয়ে কোন শিক্ষকই তার অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। শিক্ষা কর্মকর্তা দিলদার নাহারকে ভুলবাল বুঝিয়ে তিনি বীরদর্পে এসব অবৈধ কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ওয়াজুফা খানম।
উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল হাজী বাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ওয়াজুফা খানম এখানে যোগদানের পর থেকেই বেশ কিছু কিছু দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। তিনি বদলি বাণিজ্য করার জন্য উত্তর পশ্চিম সোহাগদলে কর্মরত শিক্ষককে শূণ্যপদ দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে বদলি শিক্ষক আনেন। অথচ সেখানে যাবার জন্য অত্র উপজেলার এক শিক্ষক পূর্বেই আবেদন করেছিলেন। তাছাড়া তিনি শিক্ষকদের যাবতীয় ছোট খাট বিল পাশ করাতে নানা অযুহাতে কালক্ষেণপন করছেন। পশ্চিম কামারকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষক জানান, তাদের টিও ম্যাডাম দিলদার নাহার খুবই ভাল লোক। তার সরলতার সুযোগ নিয়ে উচ্চমান সহকারি ওয়াজুফা খানম শিক্ষক বদলি নীতিমালা না মেনে যা ইচেছ তাই করে যাচ্ছেন। ওয়াজুফা তার এসব দুর্নীতির সহযোগীতার জন্য মিজানুর রহমান নামে এক শিক্ষককে মাসের পর মাস শিক্ষা অফিসে ডেপুটেশনে এনে রেখেছেন।
একাধিক শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, উচ্চমান সহকারি ওয়াজুফা উপজেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করার পর থেকেই ঘুষ দুর্নীতি বদলি বাণিজ্যে জড়িয়ে পরেন। তিনি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শিক্ষকের আবেদন থাকা স্বত্তেও বদলী না করে বহিরাগত উপজেলা থেকে আগত এক শিক্ষককে উপজেলার উঃপঃ সোহাগদল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষককে শূণ্যপদ দেখিয়ে বদলি করেন। ঘুষের বিনিময়ে ওয়াজুফা উত্তর উড়িবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪জন এবং বলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও বিদ্যালয়ের মাসিক রির্টানে ৫জন কর্মরত দেখিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জেলায় বদলির প্রস্তাব পাঠান। যাদের পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ডিপিএড প্রশিক্ষনে রয়েছেন। বদলির প্রস্তাব পাঠিয়ে বাণিজ্য করেন। তার এসব অবৈধকাজে সহযোগীতার জন্য মিজানুর রহমান নামে এক শিক্ষককে মাসের পর মাস শিক্ষা অফিসে ডেপুটিশনে রেখেছেন।
শর্ষিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, অফিসের করনিক রাজ্জাক সাহেব বদলি হওয়ার আগে শিক্ষক বদলি বাণিজ্যর প্রসেসিং করে গেছেন। বাকিটা ওয়াজুফা ম্যাডাম এসে করছেন বলে শুনেছি। তবে তিনি নানা অযুহাতে তাদের বিভিন্ন বিল ছাড়তে চাননা।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অফিসের উচ্চমান সহকারি ওয়াজুফা দাবী করে বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত শিক্ষকদের বদলির সময়। নিয়ম অনুযায়ি শিক্ষকদের বদলি হয়েছে। এখানে কোন দুর্নীতি হচ্ছেনা। নিয়ম অনুযায়ি শিক্ষকদের সব বিলই ছাড়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা দিলদার নাহার বলেন, আসলে এ অফিসের ওই চেয়ারে যেই আসেন অনেক কিছু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি দক্ষতার সহিত শিক্ষকদের বদলি ব্যাপার তদারকি করেছি। এখানে কোন দুর্নীতি হতে দেয়নি। আর ওয়াজুফার ব্যাপারে এরকম কোন দুর্নীতির খবর আমার জানাও নেই বলে জানান।